×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

+8801708-500125

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
+880-01708-500125
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

বছরভর সুস্থ থাকার পাশওয়ার্ড

ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্য
2019-05-09 13:59:32

বর্তমান জীবনের দুর্বার গতি, স্ট্রেস বা টেনশন, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, আরাম-আয়েসে ঘেরা বিলাসবহুল জীবন, স্বাভাবিক শর্করা নির্ভর খাবারের পরিবর্তে মশলাভিত্তিক জাষ্কফুড বা ফাস্টফুড ডেকে আনছে নানান বিপদ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক সুস্থ জীবন।

কিছু কিছু বদ-অভ্যাস এবং নেশাও দেহের সুস্থতাকে ক্ষুণ্ন করে। কেউ কেউ ধূমপানের নেশা করেন আবার কেউ কেউ মদ্যপানের নেশায় আনক্ত হয়ে ওঠেন। ফলে দেহের নানান উপসর্গ যেমন ফুসফুস ও হার্টের ট্রাবল, স্নায়ুর সমস্যা, অনিদ্রা, ক্ষুদ্রামান্দ্য ইত্যাদির ফলে দেহে ও মনে নানা সমস্যা দেখা দেয়।

মাত্রানুযায়ী চা বা মদ্যপান নাকি স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। কিন্তু বেশি পরিমানে ওইসব পান দেহে নানা উপসর্গের সৃষ্টি করে। দেহে কর্মোপযোগী শক্তি নির্ভর করে খাদ্যের শক্তি উৎপাদনকারী উপাদানগুলোর ওপর। দেহের স্বাভাবিক সুস্থতা ও কর্মক্ষমতাকে অক্ষুণ্ন রাখতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস এবং ফুড নিউট্রিয়েন্টসদের সাহায্য দরকার হয়।

নানা কারণে বিশেষ করে রোগভোগ, পরিবেশ দূষণ, আঘাত, দূষিত ওষুধ গ্রহণ, বদনেশা ইত্যাদি দেহে ক্ষতিকারক একটি বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের সৃষ্টি করে, যাকে বলে ফ্রি-র‌্যাডিক্যালস। এইসব দূষিত পদার্থ দেহে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।

জীবনশৈলী এবং ভুলভাল খাদ্যাভ্যাসের গোলমেলে কারণে ক্যানসারের মতো একটি মারাত্মক ব্যাধিতে ভুগছেন বহু মানুষ। জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন ঘটালে দুরারোগ্য এই অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।

তাহলে কীভাবে মিলবে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি?

সুস্থ থাকব ভাবলেই তো আর চলবে না। দরকারি বিশেষ ধরনের জীবনযাত্রাপ্রণালী, দেহের উপযোগী খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, আসন ইত্যাদি। যেগুলোর মাধ্যমে রোগ উপসর্গকে দূরে সরিয়ে জীবনকে উপভোগ করা যায়।

লাইফ স্টাইল চেঞ্জ করেই লাইফ স্টাইল ডিজিজকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস, করোনারি ডিজিজ, উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন সহ বেশ কিছু অসুখকে নিয়ন্ত্রিত করা যায় শুধুমাত্র সঠিক জীবনশৈলীর মাধ্যমে। সমস্তরকম শারীরিক ও মানসিক চাপের থেকে মুক্ত থাকা যায় এভাবেই। ভালো ঘুম হলে শরীরের উত্তেজনা কমে যাবে, মন শান্ত হবে।

শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ভালো। সকালে রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে, প্রকৃতি শান্ত থাকে, দূষণের পরিমাণও কম থাকে। সারা রাত ঘুমের পর মন থাকে সতেজ, তাই অনেকেই এ সময় হাঁটতে ভালোবাসেন। কিন্তু ডাক্তাররা মনে করেন ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুমের পর রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি থাকে, নাড়ির গতিও কম থাকে এবং দেহের সমস্ত মাংসপেশি শিথিল থাকে। এ সময়ে তাই স্ট্রেস বেশি না করাই ভালো। তবে একটু বেলা হলে চা খেয়েঘরে একটু পায়চারি করে বেরোলে অত চিন্তার কিছু নেই।

বয়স্ক ব্যক্তিরা শীতের সময় বা বর্ষাকালে বিকেলে পড়ন্ত রোদে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।

সুস্থ ব্যক্তি দিনে এক ঘন্টায় হাঁটবেন তিন-চার কি.মি। এতে তিনশো থেকে পাঁচশো ক্যালোরি শক্তি ক্ষয় হয়। প্রথম প্রথম এতটা হাঁটাসম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে কিন্তু ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাবে। প্রথমে পনেরো মিনিট, তারপর তিরিশ মিনিট, শেষে ষাট মিনিট থেকে নব্বই মিনিট, এক ঘন্টায় দু’মাইল হাঁটলে শক্তি ঝরে প্রায় তিনশো ক্যালোরি।

শরীরের মেদ ঝরাতে হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। তবে হাঁটলেই অনেকের খিদে পায় আর খিদে পেলেই যদি ভালো-মন্দ খাওয়া হয় তাহলে নিটফল পুনরায় শরীরে মেদবৃদ্ধি। অবশ্য এটাও ঠিক একদম খালি পেটে কিংবা খালি পায়ে হাঁটা ভালো নয়।

হাঁটার পাশাপাশি ডায়েটিংটাও জরুরি। ডায়েটিং মানে সবকিছু খাবার বাদ দিয়ে দেওয়া নয়। ডায়েটিংয়ের মূল কথা হল শরীর দুর্বল লাগবে না কিন্তু সারাদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম করার প্রয়োজনীয় শক্তিটুকু, যেটুকু খাবেন তার মধ্যে থেকেই পাবেন। একজন ডায়েটিশিয়ান সঠিকভাবে আপনার বয়স, উচ্চতা ও গড়ন অনুযায়ী ডায়েট চার্ট তৈরি করে দিতে পারেন।

হাঁটা সম্ভব না হলে কী করবেন

হাঁটা সম্ভভ না হলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বারান্দা কিংবা ছাদে অথবা ঘরেই জগিং করতে পারেন। সপ্তাহে পাঁচদিন ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট ধরে এক্সারসাইজ করুন। খালি পেটে এক্সারসাইজ করবেন না।

ব্যায়াম বা আসনের মধ্যে দিয়ে কি

সম্ভব ফিটনেস বজায় রাখা

শরীর ফিট রাখার জন্য কিছু ব্যায়াম নিজে নিজেই করা যায় যদি একবার টিভি বা কারো কাছ থেকে দেখে নিতে পারেন। কিন্তু যদি কোনো অসুখ থাকে বা অপারেশনের পর হলে বিশেষজ্ঞর সাহায্য নিতে হবে। আসন শুরু করার আগে কয়েকটি খালি হাতের ব্যায়াম অর্থাৎ ওয়ার্ম-আপ করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।

প্রতিদিন একই সময়ে আসন শুরু করবেন। আসন অভ্যাস করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই দম বন্ধ করা উচিত নয়। ঢিলেঢালা পোশাক পরে মেঝেতে মাদুর বা শতরঞ্জি পেতে আসন করবেন। আসন করে যদি শরীরে ব্যথা বা কোনো উপসর্গ হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কখন আসন করা উচিত নয়

  • কান পাকা, চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ, হৃৎিপিন্ড দুর্বল বা রক্তের চাপ বৃদ্ধিতে শীর্ষাসন করা উচিত নয়।
  • লিভার বা পিলে বেড়ে গেলে ভুজঙ্গাসন, শলভাসন, ধনুরাসন করা যাবে না।
  • পুরনো সর্দি বা নাকের কোনো অসুবিধে থাকলে সর্বাঙ্গাসন সতর্কতার সঙ্গে অভ্যাস করতে হবে।
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস বা হার্নিয়র কোনো সমস্যা থাকলে পশ্চিমোথুানাসন অভ্যাস করা উচিত নয়।
  • রক্তের চাপ অত্যন্ত  বেশি হলে শবাসন, নাড়ি শোধন প্রাণায়াম এবং শীতলী প্রাণায়াম ছাড়া অন্য কোনো আসন অভ্যাস করা উচিত নয়।
  • মেয়েদের পিরয়িডের সময় চার-পাঁচ দিন ব্যায়াম অভ্যাস করা বন্ধ রাখতে হবে।
  • সপ্তাহে একদিন ব্যায়াম বন্ধ রাখতে হবে।

ব্যায়াম ছাড়া আর কী

করা যেতে পারে

লিফট ব্যবহার না করে যতদূল সম্ভব সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করা ভালো। প্রথমে এক তলা সিড়ির ধাপ দিয়ে শুরু করে পরে বাড়াতে হবে।

ট্রামে-বাসে যাতায়াত করলে দু’এক স্টপ আগে নেমে পড়বেন এবং বাকি পথটুকু হেঁটে ফিরুন।

গাড়ি থাকলেও সেই একই ব্যবস্থা। দূরে গাড়ি পার্ক করে হেঁটে অফিসে আসুন। যারা টেবিলে বসে কাজ করেন তারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে উঠে দাঁড়িয়ে টানটান হবেন এবং একটু হাঁটাচলা করে নেবেন।

দোকান-বাজার করা ও বাড়ির কাজে হাত লাগান।

হার্ট কীভাবে সুস্থ রাখা যায়

নিয়মিত দৈহিক এক্সারসাইজ করেন। ধূমপান ছেড়ে দিন এবং যারা ধূমপান করেন তাদের থেকে দূরে থাকুন। ব্লাড সুগার, কোলেস্টেরল এবং রক্তের উচ্চচাপ আয়ত্তের মধ্যে রাখুন। শরীরের ওজন বেশি থাকলে তা কমিয়ে ফেলুন। কোলেস্টেরল বেশি থাকলে স্নেহজাতীয় খাবার এবং নুন বা লবণ বেশি খাবেন না। শাকসবজি, ফলমূল বেশি করে খান।

মদ্যপান করলে

শরীরের কী কী ক্ষতি হয়

মদ্যপান বর্জন করাটা সবচেয়ে ভালো। একান্ত না পারলে যতটা কম করা সম্ভব সেটা করুন।

পাশ্চাত্য দেশের মতো মদ্যপানের প্রবণতা এখন আমাদের দেশেও বাড়ছে, বিশেস করে ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে। কেউ বা মানসিক চাপ বা অবসাদ কমাতে মদ্যপান করছেন। ফলে অল্পবয়সেই শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। দেখা গেছে মদ্যপানের পরিমাণ হ্রাস করলে বা একেবারে বর্জন করলে রক্তচাপ কমে আসে। তাছাড়া বেশি মদ্যপান লিভারের পক্ষে ভালো নয়। এতে লিভারের সেলগুলো শক্ত হয়ে কুঁকড়ে যায়। ক্রমশ সেলগুলো শক্ত হয়ে কুঁকুড়ে যায়। ক্রমশ লিভারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়, একে বলে লিভার ফেলিওর। তাছাড়া যকৃতের কোষ আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রদাহ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে বিশেষ ধরনের পচন আরম্ভ হয়। স্বাভাবিক কাজকর্মে, চলাফেরায় এবং কথাবার্তায় অসংলগ্নতা লক্ষ করা যায়। হাত-পা ঝিনঝিন করে, এমনকি চায়ের কাপ বা কলম ধরলে হাত কাঁপে।

ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে

কী করা উচিত

শরীরের ওজন কমিয়ে ফেলুন যদি ওজন বেশি হয়। অতিরিক্ত নুন খাওয়া বন্ধ করতে হবে। পাতে আলাদা করে নুন একেবারেই নয়। মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম করুন। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার বেশি করে খান। ফলমূল, টাটকা শাকসবজি বেশি করে খান। ছোট মাছ, মুরগির মাংস, মাঠা তোলা দুধ খান। রেড মিট, মিষ্টি খাবার ও পানীয় যত কম খাওয়া যায় ততই মঙ্গল।

ধূমপান স্বাস্থের পক্ষে কতটা

ক্ষতিকর

মদ্যপানের মতো ধূমপানও আমাদের শরীরের পক্ষে চরম ক্ষতিকর। এটি শুধু ফুসফুসেরই ক্ষতি করে না, আমাদের শ্বাসনালীরও ক্ষতি করে। খারাপ ধরনের কাশি ও গলার সমস্যা হয়। যক্ষ্মাও হতে পারে। শ্বাসকষ্ট অর্থাৎ হাপানি, ব্রষ্কাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ক্যানসারের মতো মারণ রোগকে ডেকে আনে।

কীভাবে স্টেস কমবে

স্ট্রেস বা চাপ এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আজকের ইঁদুরদৌড়ের যুগে ছোট থেকে বড় সকলেই এই চাপের শিকার। স্টেস মানসিক ক্ষতির সঙ্গে শরীরেরও প্রচন্ড ক্ষতি করে। মানসিক চাপকে তাই বলা হয় নিঃশব্দ ঘাতক। এই চাপের কারণে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি রোগের কবলে পড়ে বহু মানুষকে অকালে চলে যেতে হয়।

স্ট্রেস বা চাপ কমাতে হলে নিয়মিত ধ্যান অভ্যেস করুন।

নিয়মিত যোগাভ্যাস বা ধ্যানে মনঃসংযোগের ক্ষমতা এবং মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ে।

প্রথম প্রথম মন হয়তো বিক্ষিপ্ত হবে, পরে মনঃসংযোগ বাড়বে। যোগাসনও চাপ কমাতে সাহায্য করে। ভালো বই পড়ুন, গান শুনন, বাগান করুন এবং মন খুলে হাসুন। সময় পেলেই দু’তিন দিনের জন্য বেড়াতে যান। প্রকৃতির কোলে ডুব দিয়ে প্রকৃতি থেকে রূপ, রস, গন্ধ নিয়ে নিজেকে ফ্রেশ করুন।

সমস্যা কিছু থাকলে মোকাবিলা করতে শিখুন। কারোর কাছে থেকে বেশি আশা করবেন না এবং সবাইকে খুশি করতে যাবেন না। দেখবেন নিজের জীবনে আর কোনো টেনশন থাকবে না।

অতিরিক্ত স্টেস থাকলে একজন অভিজ্ঞ মনোবিদের সাহায্য নিন, তিনি আপনাকে স্ট্রেস রিলিফ করতে সাহায্য করবেন।

ঘুম কি শরীরের স্ট্রেস দূর করে

ঘুম আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের মধ্যে দিয়ে আমরা মানসিক বিশ্রাম পাই। ভালো ঘুম শরীর ও মনের পক্ষে ভালো তো বটেই এমনকী যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে। ঘুম না হলে শরীর ঠিক থাকে না। মন-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, মাথা ভার লাগে, কাজকর্মে উৎসাহ থাকে না। মনঃসংযোগ অসুবিধা হয়। নিদ্রাহীনতা ডেকে আনতে পারে ভয়ষ্কর কিছু রোগ। যেমন হাইপারটেনশন, ইস্কিমিক হার্টডিজিজ, সেরিব্রাল অ্যাটাক, শ্বাসকষ্ট, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি। কাজেই এই সব বিপদ এড়াতে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে অন্তত ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুম অবশ্যই দরকার।

ভালো ঘুমের জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলুন

  • রাতের খাওয়া দশটার মধ্যে শেষ করুন। খেয়েই শোবেন না। ঘন্টাখানেক হাঁটাহাঁটি, গল্পগুজব করে, টিভি দেখে, গান শুনে কাটিয়ে দিন। রাতের খাওয়াটা যেন হালকা এবং সহজপাচ্য হয়।

ইংরেজিতে একটা কথা আছে, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, সকালের খাবার খাবেন রাজার মতো, দুপুরের খাবার হোক রাজপুত্রের মতো এবং রাতের খাবার হোক ফকিরের মতো। শোওয়ার ঠিক আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেতে পারেন। দুধের ক্যালসিয়াম এবং মেলাটোনিন ঘুম আনতে সাহায্য করে।

  • শোয়ারের আগে ফোনে বেশি কথা বলবেন না। শুয়ে শুয়ে টিভি দেখা বা বই পড়ার মতো কোনো কাজ করবেন না। পছন্দসই হালকা আলো ঘরে রাখতে পারেন। খুব লো ভলিউমে গান বা মিউজিক আপনার ঘুম আনতে সাহায্য করবে।
  • ঘুমোনোর আগে চা-কফি, সিগারেট, মদ কিছুই খাবেন না। ঘুমোনোর আগে হাত-পা, ঘাড় মুখ জল দিয়ে ধুতে পারেন। পরিষ্কার কাপড়-জামা পরে ভালো করে মাথা আঁচরে ঘুমোতে যান। যদি কারো মনে হয় এক কাপ গরম দুধবা হরলিক্স খেলে ঘুমটা ভালো হবে তাহলে তিনি তা অবশ্যই খেতে পারেন।
  • প্রতি রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে শুতে যান। সেটা অবশ্যই বারোটার আগে। বিছানায় কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পরেও যদি ঘুম না আসে তাহলে বিছানা থেকে উঠে ঘরে পায়চারি করুন। লো ভলিউমে রেডিও শুনুন। কোনো কমিক্স কিংবা হালকা গল্পের বই পড়ুন। ঘুম এলে বিছানায় যান।
  • বিছানায় শুয়ে সারাদিনের নানা কাজ, ঝুটঝামেলা, খারাপ লাগা, সব বিষয় ভুলে যান। মন ভালো করে দেয় এমন বিষয় ভাবুন। রাতে শোওয়ার আগে কারো সাথে বাদানুবাদ কখনোই নয়। পাশ ফিরে চোখ বুজুন, ঘুম আসবে।
  • রাতে হালকা ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন। চুল বড় থাকলে বেঁধে নিন, না হলে আঁচড়ে নিন পুরুষ বা মহিলা দু’জনেই। হালকা করে পাউডার লাগান, মন ভালো থাকবে। চুল আঁচড়ালে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় যা ঘুমের জন্য আদর্শ। হালকা উষ্ণ জলে স্মান ঘুম আনতে ভালো কাজ করে।

দাম্পত্যে অসুখ কি

স্ট্রেস তৈরি করে

দশটা-পাঁচটার চাকরি আজকের দিনে বিলুপ্তির পথে। চাকরির ধরন বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে লাইফস্টাইলেরও আমুল পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। অবধারিতভাবেই জীবনযাত্রা তার প্রভাব বিস্তার করেছে দাম্পত্যের মধ্যেও।

মানসিক সমস্যা থেকে শারীরিক সমস্যাও ভীষণভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এই ব্যাপারটাকে চিহ্নিত করা হয় লাইফস্টাইল ডিজিজ নামে।

  • টেনশন, অ্যাংজাইটি: ঘরে-বাইরে কাজের চাপ, নিজের কাজের ডেডলাইন বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে সংসারের রোজকারের ঝুটঝামেলা সব মিলে মিশে শরীর ও মনে অসম্ভব রকমের একটা চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় এই চাপের মোকাবিলা করতে করতে মনঃসযোগ ব্যাহত হয়। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। কাজ সম্বন্ধে একটা আতষ্ক তৈরি হয়।

শারীরিক গোলযোগের মধ্যে দেখা দেয় অনিদ্রা, খিদে না পাওয়া, হজমের গন্ডগোল, মাথাধরা এবং পিঠে ব্যথা।

দাম্পত্য, বন্ধুত্ব এবং অন্যান্য পারিবারিক সম্পর্কে স্ট্রেসের প্রভাব প্রচন্ড। কথায় কথায় অধের্য হয়ে যাওয়া, রেগে ওঠা, অন্যের কথায় কান না দেওয়া বা ডিপ্রেশনে ডুবে থাকা এগুলো সবই কিন্তু অ্যাংজাইটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

  • ইগো ক্লাস : কিছুদিন আগে পর্যন্তও পুরুষ নারীর কর্মক্ষেত্রে ছিল আলাদা আলাদা। রান্নাঘর এবং ছেলেমেয়ে মানুষ করাকেই মেয়েদের কাজ মনে করা হত। বিশ্বায়নের যুগে মেয়েরা আজ মা এবং গৃহিনী ছাড়াও হাজারো দায়িত্ব, কর্তব্য পালন করে চলেছেন। অর্থনৈতিক হাল ধরতেও মেয়েরা আজ সমানতালে পুরুষদের পাশাপাশি। বাইরের দুনিয়ার খবর, হালচাল সবকিছু তাদের নখদর্পণে।

এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পুরুষ উভয়েরই সময় লাগে। দম্পতিদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের সংঘাত, কথা বন্ধ চলতেই থাকে। কোনো কোনো সময় তাদের এই সংঘাত আর শোবার ঘরে মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বাইরে বেরিয়ে আসে। পারিবারিক অশান্তিতে পুরো পরিবার জড়িয়ে পড়ে।

  • ওবেসিটি : ওবেসিটি বা শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে। এই সমস্যার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে আধুনিক জীবনযাত্রা। এক জায়গায় বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করা বা টিভি দেখা, কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রচুর জাষ্কফুড খাওয়া, যে কোনো ধরনের কায়িক পরিশ্রম এড়িয়ে চলাকেই সুস্থ জীবনের প্রধান শক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া জিনঘটিত কারণেও ওবেসিটি দেখা দিতে পারে।

ওবেসিটির হাত ধরে নানা রোগ। হাই ব্লাডপ্রেসার, হাই কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের মতো অসুখ, সহজেই নানা দিক দিয়ে বিপন্ন করে তোলে।

তাহলে কী করা উচিত

সারাদিনের ক্লান্তি, অবসন্নতা কাটাতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে গান শুনুন। বন্ধু-বান্ধব, স্বামী-স্ত্রী আড্ডা দিন। এস.এম.এসে, জোকসং এক্সচেঞ্জ করুন। যারা বই পড়তে ভালোবাসেন, সঙ্গে ম্যাগাজিন বা বই রাখুন। অবসরে পাতা ওল্টান।

কাজ থেকে ব্রেক নিন সময় করে। ছুটির দিনে চুটিয়ে বিশ্রাম নিন। সিনেমা দেখুন, নাটক দেখুন। মাঝে মাঝে কয়েকদিনের জন্য কাছে-পিঠে ঘুরে আসুন। মোটামুটি জীবনটাকে সুন্দরভাবে উপভোগ করুন। ক্লান্তি কাটাতে কফি বা চা খান। সিগারেট বা অ্যালকোহলকে প্রশ্রয় দেবেন না। সাময়িক ভালো লাগা দীর্ঘকালীন ক্ষতি করতে পারে শরীরের।সকালে কাজের ফাঁকে কিংবা বিকেলে এক কাপ গ্রিন টি খান, শরীর ভালো থাকবে। অন্যের কথা ধৈয্য ধরে শোনার অভ্যাস করুন এবং মন খুলে কমপ্লিমেন্টস দিন। দেখবেন সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। দিনের শুরুতে ডায়েরিতে সারাদিনের কাজের প্ল্যানিং করে নিন এবং সেটা ফলো করুন।

সুস্থ দাম্পত্য জীবন

কি সুখের চাবিকাঠি

প্রথমেই স্বামী-স্ত্রী দু’জন দু’জনকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। প্রত্যেকটি মানুষ তার নিজের মতো। কোনারকম আলোচনা এমনকী কথা কাটাকাটির সময়ও দু’জনে দু’জনের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিন, বুঝবার চেষ্টা করুন। অপমানজনক কোনো মন্তব্য করে কোনো কথাকে উড়িয়ে দেবেন না। এতে আপনি ছোপ হয়ে যাবেন।

নিজেদের সমস্যার মধ্যে কখনোই পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে কখনোই পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে সাহায্য চাইবেন না। নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা নিজেদের শোবার ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে রাখুন। এমনকী সন্তানদেরও এর মধ্যে জড়াবেন ন।

দু’জনে দু’জনকে সময় দিন নিয়ম করে। সাংসারিক কথাবার্তা ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলুন। দু’জনে একসাথে সিনেমা দেখুন, শপিং করুন। বেড়ানে যান। ভালোবাসাকেও প্রকাশ করার দরকার পড়ে। মনের মধ্যে রেখে দিলেই চলে না। মাঝে মাঝে ‘ভালোবাসি’ কথাটা বলুন, দু’জনে দু’জনকে ছোটখাটো উপহার দিন। গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো কখনোই ভুলে যাবেন না। যেমন বিয়ের তারিখ, জন্মদিন ইত্যাদি। আদরে সোহাগে এমনভাবে থাকুন দুজনে যাতে উভয়েই মনে করেন আপনি ওকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আপনার প্রিয় পুরুষ বা নারী কখনোই যেন অনুভব না করেন আপনি তাকে অবহেলা করছেন।

এক কথা বারবার বলে বা চেঁচামেচি করে, চোখের জল ফেল ওকে নিজের মনের মতো করে তুলতে চেষ্টা করবেননা। উনি যেমনটা তেমনটাই ওকে ভালোবাসুন। যদি কোনো ব্যাপার আহত হন তাহলে কোনো ভনিতা ছাড়া খোলাখুলি কথা বলে নিন।

শুধুমাত্র মজার জন্য বা অভ্যাসের কারণে কখনো কারো সঙ্গে করবেন না। আপনার ঘরের মানুষটি যদি খুব বেশি সেনসিটিভ হন তাহলে তার খারাপ লাগার পাশাপাশি মনের কোণে সন্দেহের বীঝ বপন করতে আপনিই সাহায্য করবেন। তাই সাবধান থাকুন এবং এসব জিনিস থেকে দূরে থাকুন।

সহবাসের শর্ত কী হওয়া উচিত

  • আপনার স্বামী-স্ত্রী দু’জনে দু’জনের ওপর আস্থা রাখুন। বিশ্বাসের ভিতের ওপর গড়ে ওঠে দাম্পত্য।
  • সেক্স নিয়ে আলোচনা করতে লজ্জা বা অপ্রস্তুত বোধ করবেন না।
  • আপনার সঙ্গীর পছন্দ-অপন্দ জানাটা খুবই জরুরি। আপনি তাকে কতটা আনন্দ দিতে পারছেন সেটা জানতে চেষ্টা করুন।
  • শারীরিক ভাবে ফিট থাকার চেষ্টা করুন যাতে মিলনের পূর্ণ আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।
  • সহবাসের সময় এমন কোনো কথা বা কাজ করবেন না যাতে আপনার সঙ্গী দুঃখ পান। মিলনের সময় যদি আপনি পূর্ণ সন্তুষ্টি লাভ না করেন তবুও আঘাত করে কোনো কথা বলবেন না বরং পরের বারের জন্য একটা রোমান্টিক প্ল্যান শুরু করে দিন।
  • সঙ্গীকে কখনও হেয় করে নিজেরে ইচ্ছেটা চাপিয়ে দেবেন না।
  • নিজেদের সেক্স লাইফ নিয়ে বাইরের কারো সঙ্গে আলোচনা করবেন না। গোপন কথাটি গোপনেই রাখুন।

খাওয়া-দাওয়া কেমন করা উচিত

  • লাল আটার রুটি।
  • মুগ, রাজমা, চানা ডালা খান।
  • সাদা তেল বা রাইস ব্র্যান অয়েল।
  • দুধ এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার।
  • মুরগির মাংস, মাছ, ডিমের সাদা অংশ।
  • শাকসবজি এবং প্রচুর ফল।
  • আলু, কচু, কাঁচকলা, মোচা খঅবেন।

কী কী কম খাবেন

  • পাঁঠার মাংস, ডিমের কুসুম, চিংড়ি।
  • ঘি এবং মাখন।
  • ক্যানড ফ্রুট জুস বা টিনড ফুড।
  • রেডি টু কুক বা প্রিজারভড ফুড।
  • মিষ্টি, চকোলেট, জেলি।
  • ময়দা দিয়ে তৈরি যে কোনো খাবার।
  • জাষ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড না খাওয়াই ভালো।
  • যতটা সম্ভব কম খাবেন।

অনলাইনে চিকিৎসা সেবা পেতে আজই ডাউনলোড করুন হ্যালো ডাক্তার এশিয়া অ্যাপ



সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন