×

Everyday: 10:00AM - 10:00PM

(+88) 01708500125

+8801708-500125

Email: care@hellodoctor.asia



× Home Our Doctors Blog Contact Us
+880-01708-500125
Everyday: 10:00AM - 10:00PM Email: care@hellodoctor.asia
Title Image

Blog

Home  /  Blog

নাক ডাকা থামাতে পারে আকুপাংচার

ডাঃ সন্দীপ সেন গুপ্ত
2019-02-01 10:44:15

রহমান সাহেব আমার পুরনো রোগী। একসময় হাঁটুরব্যথার চিকিৎসা করিয়ে উপকার পেয়ে ছিলেন।বহুদিন পর হঠাৎ তিনি উপস্থিত। কিঞ্চিত বিব্রত ভাবে বললেন, ‘ডাক্তারবাবু, আকুপাংচারে নাকডাকার কোনো সুরাহা হবে? এ নিয়ে বাড়িতে বড় অশান্তি’।তাকে আশ্বস্ত করা গেলএই বলে যে, নাকের মধ্যে কোনো ‍বিকৃতি বা টিউমার না থাকলে অবশ্যই নাকডাকা কমানো যাবে।

চিকিৎসা শুরু হল। নাকের কাছে এবং হাতের ও পায়ের চামড়ার ওপর অবস্থিত দু’-তিনটি বিন্দুতে সুঁচ ফুটিয়ে উত্তেজনাদেওয়া হল।এভাবে দু’-তিনটি সিটিং চিকিৎসার পরই রহমান সাহেব সুফল পেতে শুরু করলেন। দশ-বারোটি সিটিংয়ের পর সমস্যার অনেকটাই সমাধান হল।এরপরও অবশ্য চিকিৎসা চলতেথাকল।কিন্তু রহমান সাহেবের মুখের দুশ্চিন্তার মেঘ কেটে গেছে।বাড়িতে অশান্তির মাত্রাও কমেছে।

নাকডাকা আসলে কী

ঘুমের মধ্যে নাক থেকে যে অস্বাভাবিক আওয়াজ হয়, তাকেই বলে নাকডাকা। শ্বাস প্রশ্বাসের সময়  নাক ও গলার মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলা চল করতে না পারলে বাধা প্রাপ্ত হয়। এই সময় তালুর মাংসল অংশ এবং আল জিভে একপ্রকার কম্পন সৃষ্টি হয়।তখনই নাক ডাকার আওয়াজ পাওয়া যায়।

নাকডাকা কাদের বেশি দেখা যায়

মূলত মধ্য বয়স্ক এবং বেশি বয়স্ক দের মধ্যে এটি দেখা যায়।কারণ এদের কন্ঠ নালীর মাংস পেশির দৃঢ়তা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়।স্থূল ব্যক্তি বা বেশি  ওজনের মানুষদেরও নাকডাকার প্রবণতা বেশি হয়।অনেকে মনে করেন পুরুষদের শ্বাসনালী নারীদের তুলনায় সরু, ফলে পুরুষদের মধ্যে নাকডাকার প্রবণতাও বেশি।

নাক ডাকার কারণ

নাক ডাকার পেছনে অনেক রকম কারণই থাকে।যেমন---

  • যাদের সাইনুসাইটিস আছে, তাদের শ্বাস চলাচলের পথ বন্ধ থাকলে নাকডাকতে পারে।
  • নেসাল সেপ্টামে ক্রটি-বিচ্যুতি থাকলেও নাকডাকতে পারে।
  • নাকডাকার অন্যতম কারণ হল নাসারন্ধ্রে টিউমার।
  • অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হল নাকডাকার একটি বিশেষ কারণ।
  • মদ্যপান. ধূমপান, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নাকডাকার বড় কারণ।
  • বয়সের সাথে সাথে কন্ঠ নালী সরু হয়ে গেলে বা কন্ঠনালীর পেশির দৃঢ়তা কমে গেলে নাকডাকতে পারে।
  • যাদের জিভ লম্বা ও বড় তাদের নাক ডাকার প্রবণতা থাকে। একইভাবে আলজিভ এবং তালুর আকার অস্বাভাবিকতা হলেও নাকডাকতে পারে।

নাক ডাকার আকুপাংচার চিকিৎসা

আকুপাংচার চিকিৎসায় অতিসূক্ষ্ম কিছু সুঁচ উপযুক্তভাবে পরিশোধিত করে নির্দিষ্ট কিছু বিন্দুতে ফোটানো হয়। বিন্দুগুলো সাধারণত নাকের দু’পাশে, হাত ও পায়ের উপর অবস্থিত। সুঁচ ফোটাতে মোটেই ব্যথা লাগেনা। এরপর ওই সুঁচগুলো কুড়ি মিনিট ফোটানো থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী মক্সা নামক ভেসজের সেঁক হাত-পায়ের বিন্দু গুলোতে দেওয়া হয়। আকুপাংচার বাইরে থেকে কোনো ওষুধ প্রয়োগ করা হয়না। শরীরের নিজস্ব শক্তি কে কাজে লাগিয়েই আকুপাংচার রোগ নির্মূল করে। চিকিৎসার শুরুতে একটু ঘন ঘন চিকিৎসা নিতে হয়। পরবর্তী কালে ক্রমশ চিকিৎসার সময় কমতে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করলে খুব কম সময়েই রোগ নিরাময় সম্ভব।

চিকিৎসার পাশাপাশি যা করা দরকার

  • নাসারন্ধ্র এবং নাসাপথ সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • শোবার ঘর যেন আর্দ্র থাকে,শুষ্কতায় নাকডাকা বেড়ে যায়।
  • চিৎ হয়ে না শুয়ে পাশ ফিরে শুতে হবে। বালিশ যেন খুব উঁচু না হয়।
  • নিয়মিত গলার কিছু ব্যায়াম করা দরকার।যেমন এ, ই, আই, ও , ইউ এই ভাওয়েল গুলো পরপর এবং বারবার বলতে হবে। তিরিশ সেকেন্ড নাকমুখ বন্ধ করে বায়ু ধরে রেখে ছাড়তে হবে। মুখ খুলে চোয়াল উপর-নীচ নাড়াচাড়া করতে হবে।

এভাবেই কিছু অভ্যাস, কিছু ব্যায়াম এবং সর্বোপরি আকুপাংচার নাকডাকা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

সৌজন্যে: ‘সুস্বাস্থ্য’ – কলকাতা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন